ঢাকায় ধর্ষণ মামলায় চিকিৎসকের বিরুদ্ধে চার্জগঠন

আদালত প্রতিবেদক
১৩ বছরের এক তরুণীকে ধর্ষণের মামলায় দরিদ্র পরিবার সেবা সংস্থা ক্লিনিকের পল্লী চিকিৎসক বিজয় কৃষ্ণ তালুকদারের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেছে ট্রাইব্যুনাল।

মঙ্গলবার ঢাকার ৫ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক বেগম শাসসুন্নাহার এই চার্জগঠনের আদেশ দেন।

যদিও এদিন আসামিপক্ষ মামলার বাদী (ভিকটিমের বাবা) ও ভিকটিমকে ম্যানেজ করে আদালতে নিয়ে আসেন।

শুনানিকালে মামলার বাদী ও ভিকটিম আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে বলানো হয়, আসামিকে অব্যাহতি দিলে তাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু আদালত এর আগে মামলায় দেয়া ভিকটিমের জবানবন্দি ও মেডিকেল রিপোর্ট পর্যালোচনা করে ধর্ষণের অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় চার্জগঠনের আদেশ দেয়।

এ সম্পর্কে ওই ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর আলী আসগর স্বপন বলেন, ধর্ষণের মামলায় আপসের কোনো সুযোগ নেই। মেডিকেল রিপোর্টে ধর্ষণের আলামত রয়েছে। সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে ট্রাইব্যুনাল চার্জগঠন করেছে।

চিকিৎসক বিজয় কৃষ্ণ তালুকদার বড়গুনার বামনা থানার চালিতা বুনিয়া গ্রামের জোগেন্দচন্দ্র তালুকদারের ছেলে। তিনি রাজধানীর দক্ষিণখান থানাধীন দরিদ্র পরিবার সেবা সংস্থা (ক্লিনিক) পরিচালনা করেন। আর ধর্ষিত তরুণী স্থানীয় একটি মাদ্রাসার ছাত্রী।

চলতি বছর ২১ এপ্রিল মামলার বাদীর মেয়ে চোখের আঘাতের সমস্যা নিয়ে দক্ষিণখানের হাজী মিল্লাত স্কুলের পাশের দরিদ্র পরিবার সেবা সংস্থায় (ক্লিনিক) আসামিকে দ্বারা চিকিৎসার করান। কিন্তু সমস্যার সমাধান না হওয়ায় গত ২৩ এপ্রিল দুপুর আড়ায়টায় আবার গেলে আসামি পরীক্ষা করে স্যালাইন লাগান এবং একটি ইনজেকশন আনার জন্য ভিকটিমের বাবাকে পাঠান। বাদী অনেক খোঁজাখুঁজির পর তা না পেয়ে সাড়ে ৩টার দিকে ফেরত আসেন এবং বেলা ৪টার দিকে স্যালাইন শেষ হওয়ায় মেয়েকে বাসায় নিয়ে যান। বাসায় যাওয়ার পর মেয়ে আর অসুস্থ হওয়ায় তাকে জিজ্ঞাসায় সে জানায়, স্যালাইন দেওয়ার সময় আসামি তাকে ধর্ষণ করেন। যা ভিটকটিম আদালতে দেয়া জবানবন্দিতেও উল্লেখ করেন।

ওই ঘটনায় ভিকটিমের বাবা ২৭ এপ্রিল দক্ষিণখান থানায় একটি মামলা করেন। ওই মামলায় পল্লী চিকিৎসক বিজয় কৃষ্ণ তালুকদার মামলার দিনই গ্রেপ্তার হন। পরদিন ২৮ এপ্রিল তাকে আদালতে হাজির করা হলে সিএমএম আদালত কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। পরে মামলাটিতে চলতি বছর ২৬ মে সিএমএম আদালত আসামির জামিন মঞ্জুর করে। এরপর তিনি কারামুক্ত হন।

মামলাটি তদন্তের পর গত ৪ জুলাই তদন্তকারী কর্মকর্তা ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশের উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন বিভাগের পুলিশ ইন্সপেক্টর তৃপ্তি খান সিএমএম আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ভিকটিমের মেডিকেল রিপোর্টে ধর্ষণের আলামত পাওয়ায় পল্লী চিকিৎসক বিজয় কৃষ্ণ তালুকদারের বিরুদ্ধে ওই চার্জশিট দাখিল করা হয়।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.