গ্রাম আদালত সক্রিয় করতে হলে বিচারিক প্যানেল সদস্যদের দক্ষতা বৃদ্ধি করা জরুরী

0

বিশেষ প্রতিনিধি: আজ ১৮ মে ২০১৮ শনিবার সকালে ঢাকাস্থ ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব লোকাল গর্ভণমেন্ট (এনআইএলজি) প্রতিষ্ঠানে শুরু হল দুই দিনব্যাপী গ্রাম আদালত বিষয়ক বিশেষ প্রশিক্ষকের প্রশিক্ষণ (টিওটি)। এতে চাঁদপুর, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার মোট ২২ জন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ৪ জন স্থানীয় সরকার উপপরিচালক অংশগ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণটি পরিচালনা করেন এনআইএলজি ও ইউএনডিপি’র পরিচালক ও উর্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ।

প্রশিক্ষণে চাঁদপুর থেকে অংশগ্রহণ করেন যথাক্রমে স্থানীয় সরকার উপপরিচালক মোহাম্মদ শওকত ওসমান, কচুয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা নীলিমা আফরোজ, মতলব-দক্ষিণ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শাহিদুল ইসলাম, মতলব-উত্তর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তার ও শাহরাস্তি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা শিরীন আক্তার। প্রশিক্ষণে গ্রাম আদালত আইন ২০০৬ (সংশোধন ২০১৩) এবং গ্রাম আদালত বিধিমালা ২০১৬ সহ গ্রাম আদালতের নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও স্থানীয় সরকার উপপরিচালকবৃন্দ এই বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রাপ্তির পর চাঁদপুর ডিস্ট্রিক ট্রেনিং পুলের (ডিটিপি) সম্মানীত সদস্য হবেন এবং জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য, সচিব ও আদালত সহকারীদের জন্য প্রশিক্ষণ পরিচালনা করবেন। এর মধ্যে ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যবৃন্দ গ্রাম আদালতে বিচারিক প্যানেল সদস্য হিসেবে অংশগ্রহণ ক’রে বিচারিক কাজে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। গ্রাম আদালত সক্রিয় করতে হলে বিচারিক প্যানেল সদস্যদের দক্ষতা বৃদ্ধি করা অতীব জরুরী। এজন্য প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই।

চাঁদপুরের গ্রাম আদালত বিষয়ক ডিস্ট্রিক্ট ফ্যাসিলিটেটর (ডিএফ) নিকোলাস বিশ্বাস বলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন “বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ (২য় পর্যায়)” প্রকল্পের আওতায়  চাঁদপুরে ২০১৭ সালের শুরুতে মোট ৯৮৫ জন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ও আদালত সংশ্লিষ্টদের মোট ৫ দিনব্যাপী গ্রাম আদালত বিষয়ক মৌলিক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। এদের মধ্যে ছিলেন ৪৪ জন ইউপি চেয়ারম্যান, ৫২৮ জন ইউপি সদস্য, ৪৪ জন সচিব, ৪৪ জন গ্রাম আদালত সহকারী ও ৩২৫ জন গ্রাম পুলিশ।

আগামী মাসের মাঝামাঝি চাঁদপুরে আবার প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হবে যেখানে জনপ্রতিনিধি সহ আদালত সংশ্লিষ্টদের দুই দিনব্যাপী গ্রাম আদালত পরিচালনার উপর রিফ্রেশার্স প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এতে কোর্স পরিচালক হিসেবে জেলা পর্যায়ে থাকবেন জেলা প্রশাসক মহোদয় এবং উপজেলা পর্যায়ে থাকবেন স্থানীয় সরকার উপপরিচালক মহোদয়। এ প্রশিক্ষণগুলোতে বিভিন্ন সেশন পরিচালনা করবেন ডিস্ট্রিক্ট ট্রেনিং পুলের সদস্যবৃন্দ। এদের মধ্যে মধ্যে রয়েছেন স্থানীয় সরকার উপপরিচালক, জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী পুলিশ সুপার, সমাজসেবা উপপরিচালক, যুব-উন্নয়ন উপপরিচালক, জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সহ সহযোগী সংস্থা ব্লাষ্টের জেলা ও উপজেলা সমন্বয়কারীগণ। জেলার ডিস্টিক্ট ফ্যাসিলিটেটর প্রশিক্ষণগুলোতে সমন্বয় সাধন করবেন।

নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি তথা ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যদের দক্ষতা যথযথভাবে বৃদ্ধি করতে পারলে নিঃসন্দেহে গ্রাম আদালতগুলো কার্যকর ও গতিশীল হয়ে উঠবে। বিচারিক প্রক্রিয়া একটি কঠিন কাজ। এখানে আইনের বিভিন্ন ধারা-উপধারা ও বিধিমালা জড়িয়ে আছে। তাই জনপ্রতিনিধিদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন ধারাবাহিক প্রশিক্ষণ ও কর্মশালা। পাশাপাশি প্রয়োজন মাঠ পর্যায়ে তাদের যথাযথ ফলোআপ যাতে তারা সঠিকভাবে বিচারিক কাজ সম্পন্ন করতে পারেন। এ কাজে নিয়মিত ও আন্তরিক হলে জনপ্রতিনিধিগণ সহজেই সফল হবেন এবং জনগণকে বিচারিক সেবা দিতে পারবেন।।

Leave A Reply