‘ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে নারীকে বাস থেকে ফেলে দেন চালক’

সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে চলন্ত বাসে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনায় চালক শহীদ মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। শনিবার সকাল ৬টায় ঢাকা থেকে সুনামগঞ্জে এসে নামার সময় পুরাতন বাসস্টেশন থেকে তাকে আটক করা হয়। পুলিশ জানায়, ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে তাকে ‘হত্যা করতে’ ওই নারীেক রাস্তায় চলন্ত বাস থেকে ফেলে দেয়া হয়েছিল। গুরুতর আহত ওই নারীকে পথচারীরা উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ায় তিনি প্রাণে বেঁচে যান।

আজ রোববার (৩ জানুয়ারি) ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানিয়েছেন সিআইডির চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অতিরিক্ত উপ মহাপরিদর্শক হাসিব আজিজ। তিনি জানান, সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুক্তা ধরের নেতৃত্বে একটি দল শনিবার সুনামগঞ্জের পুরাতন বাস স্ট্যান্ড থেকে শহিদ মিয়াকে গ্রেপ্তার করে। শহিদ সিলেটের মোল্লারগাঁও এলাকার বাসিন্দা। সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অতিরিক্ত উপ মহাপরিদর্শক হাসিব আজিজ জানান, গত ২৬ ডিসেম্বর ‘ফাহাদ অ্যান্ড মায়শা পরিবহন’ নামের বাসটি সিলেট থেকে দিরাইয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে দুপুর ২টার দিকে সুনামগঞ্জে পৌঁছায়। এক ব্যক্তি তার শ্যালিকাকে সিলেটের লামাকাজি থেকে দিরাইপুর যাওয়ার সেই বাসে জন্য তুলে দেন।

পথিমধ্যে সব যাত্রী বাস থেকে নেমে গেলে দিরাইয়ের পাতারিয়া এলাকায় চালক শহিদ মিয়া সেই নারীকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ সময়ে সেই নারী চিৎকার শুরু করলে আশপাশের লোকজন গাড়িটি আটকের চেষ্টা করে। সিআইডি কর্মকর্তা হাসিব বলেন, পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ধর্ষণে ব্যর্থ চালক শহিদ মিয়া ওই নারীকে হত্যার উদ্দেশ্যে চলন্ত বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। পথচারীরা গুরুতর আহত অবস্থায় সেই নারীকে সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজে নিয়ে যায়।

তিনি জানান, এরপর সিআইডির সাঁড়াশি অভিযানে শহিদের ছোটভাই মো. কছির এবং দুলাভাই সুমনকে আটক করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শহিদের অবস্থান নিশ্চিত করার জন্য ভোগড়া বাইপাস এবং উত্তরার দিয়াবাড়িতে অভিযান চালানো হয়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায়, শহিদ ঢাকার সায়দাবাদ থেকে সুনামগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে। এরপর শনিবার সুনামগঞ্জ পুরাতন বাস স্ট্যান্ড থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

শহিদ যখন ওই নারীকে ধর্ষণের চেষ্টা করছিল, তখন চালকের আসনে ছিল সহকারী রশিদ। চালকের আরেকজন সহকারীও সেসময় বাসে ছিল, যাকে খোঁজা হচ্ছে বলে জানান তিনি। রশিদকে গত সোমবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি পরদিন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শহিদ ধর্ষণ চেষ্টার কথা স্বীকার করেছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। ধর্ষণ চেষ্টার ওই ঘটনায় ২৬ ডিসেম্বর সুনামগঞ্জের দিরাই থানায় একটি মামলা হয়েছে।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.