সিঙ্গার বিলে ৩০ হাজার বিঘা জমি পানির নিচে, কৃষকের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ,৮৫টি পরিবার পানিবন্দি 

সেলিম আবে,খুলনা প্রতিনিধি 

খুলনার ডুমুরিয়ায় সিঙ্গা-চহেড়া সুইস  গেট দিয়ে পানি নিষ্কাশন না হ‌ওয়ায় সিঙ্গার বিলে ৩০ হাজার বিঘা জমি পানির নিচে নিমজ্জিত হয়েছে। ভেসে গেছে ১০ হাজার মৎস্য ঘের,কৃষকের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ। পানিবন্দি রয়েছে ৮৫টি পরিবার। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড,বিএডিসি ও স্থানিক  ইউপি চেয়ারম্যান পানি নিষ্কাশনে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে। সরেজমিনে গিয়ে একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার ২৫নং পোল্ডারের আওতাধীন খর্ণিয়া ইউনিয়নে বিল সিঙ্গা বৃহত্তর একটি বিল। এ বিলে খর্ণিয়া ও রুদাঘরা ইউনিয়নে ৩০ হাজার বিঘা আবাদি জমি রয়েছে। বর্ষা মৌসুমে সিঙ্গানদী দিয়ে চহেড়া,রানাই,আঙ্গারদহা,টিপনা , মধুগ্রাম সহ ১০/১২টি গ্রামের পানি চহেড়া-সিঙ্গা সুইস  গেট দিয়ে নিস্কাশন হয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। বিগত ৩/৪ বছর সুইস  গেটের বাহির মুখ পলি পড়ে ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি নিস্কাশনে দারুন বিঘ্ন ঘটায় প্রতি বছর গ্রামবাসীরা সেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে পলি অপসারণ করে আসছে

চলতি মাসের প্রথম দিকে প্রবল ও ভারী বর্ষণের ফলে এ বিলটি জলাবদ্ধতায় রুপ নেয়। এতে ভেসে যায় হাজার হাজার মৎস্য ঘের ও সবজি ক্ষেত। এছাড়া বিলসিঙ্গা গ্রামের ৮৫টি পরিবার পানি বন্দি হয়ে পড়েছে, বেড়েছে সাপের উপদ্রব। গ্রামে একটি মাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সেটাও বন্ধ।সব মিলে প্রকৃতির সাথে লড়াই করে দুর্বিসহ জীবন যাপন করছেন তারা। কথা হয় বিলসিঙ্গা গ্রামের নিতাই গাইন, রবিন বৈরাগী, সুভাষ বৈরাগী, মিন্টু বৈরাগী সহ একাধিক ভুক্তভোগীর সাথে। তারা বলেন,এক মাসের বেশি আমাদের গ্রামটা জলমগ্ন, অনেকেই তলিয়ে যাওয়া ঘরবাড়ি ছেড়ে বিভিন্ন আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। গবাদি পশু ও হাঁস মুরগিগুলো খাদ্য অভাবে সস্তায় বিক্রি করে দিচ্ছে।

আমরা অবহেলিত এ এলাকাটি দুর্গত এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করার দাবি জানাচ্ছি সরকারের প্রতি। স্থানীয় খর্ণিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শেখ দিদারুল হোসেন দিদার বলেন, বৃহত্তর বিলসিঙ্গার পানি নিষ্কাশনের লক্ষে দুই ইউনিয়নের লোকজন নিয়ে বিল কমিটি গঠন করা হয়েছে, এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে সুইস  গেটের ভিতর ও বাহির মুখে পলি অপসারণ করা হচ্ছে। এছাড়া রাতদিন গ্রামবাসি কে সাথে নিয়ে বিল বাঁচানোর জন্য  সেচ্ছাশ্রমে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে বিএডিসি থেকে ৬টি সেচ মটর বরাদ্দ পেয়েছি।

 

আশা করি মটর গুলো স্থাপন  করা হলে দ্রুত পানি নিষ্কাশন হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ আতিকুর রহমান বলেন,বিলসিঙ্গার পানি নিস্কাশনের জন্য সুইস  গেটের দুই মুখে স্কেভেটর দিয়ে ভরাট পলি অপসারণের কাজ চলছে এটা অব্যাহত থাকবে। এ প্রসঙ্গে বিএডিসি ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলী বদিউল আলম সরকার বলেন,ওই বিলের পানি নিষ্কাশনের জন্য ৬টি সেচ মটর বরাদ্দ দেয়া হয়েছে , বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য একটু বিলম্ব হচ্ছে। এটা স্থাপন  করা হলে দ্রুত পানি নিষ্কাশন হবে বলে আশা করি।

 

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.