আধিপত্য বিস্তার কে কেন্দ্র করে বিএনপির দু-পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ আহত-৮

স্টাফ রিপোর্টার :
জামালপুরের সরিষাবাড়ীর পিংনা গোপালগঞ্জ গরুর হাটের দখল নিয়ে আধিপত্য বিস্তার কে কেন্দ্র করে বিএনপির দু- গ্রুপে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। দু-দফায় সংঘর্ষে ৮ জন মারধরের শিকার হয়ে আঘাত প্রপ্ত হয়েছেন। শুক্রবার(৩০ আগস্ট) রাতে সরিষাবাড়ী উপজেলার পিংনা ইউনিযনের বিএনপি’র নেতা ও কর্মীর মধ্যে এ ঘটনা ঘটেছে।স্থানীয় ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সরিষাবাড়ী উপজেলার পিংনা ইউনিয়ন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নাজমুল ইসলাম নাজু ও সাধারন সম্পাদকের আব্দুর রশীদ এর মধ্যে পিংনা গোপালগঞ্জ গরুর হাটের আধিপত্য বিস্তার কে কেন্দ্র করে দু-পক্ষের দ্বন্দ চলে আসছিল। গতকাল শুক্রবার রাত ৮ টার দিকে পিংনা ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারন সম্পাদকের আব্দুর রশীদ তার নেতা কর্মী সহকারে মোটর সাইকেল নিয়ে পিংনা বাজারের দিকে রওনা হন। পথিমধ্যে পিংনা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ এলাকায় এলে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির নাজু’র অনুসারী জহুরুল ইসলাম, পনির,মনির,বায়জিদ, আকাশ, রনি, কবীর,টিটো সহ দলাবদ্ধভাবে অর্তকিত হামলা ও মারপিট চালায়। হামলায় পিংনা ইউনিয়ন যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহজামাল,ইউনিয়ন ছাত্র দলের সহ সভাপতি নাছির উদ্দিন ও ছাত্র দলের সদস্য স¤্রাট এর মোটর সাইকেল ভাংচুর এবং ও মারপিটের করে। এ ছাড়াও সাইফুল ইসলাম নামে একজন বিএনপি কর্মীও মারধরের শিকার হন। শুক্রবার রাতেই গুরুতর আহত শাহজামাল কে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনার জের ধরে পিংনা ইউনিয়ন বিএনপি’র কাযালয়ে টাঙ্গানো সাবেক প্রেসিডেন্ট শহীদ জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ছবি সহ চেয়ার ভাংচুর করার অভিযোগ করেন আব্দুর রশীদ পন্থী নেতা-কর্মীরা।
এ ভাংচুর ঘটনাটি বিএনপিতে অনুপ্রবেশকারী জড়িত বলে দাবী করেন পিংনা ইউনিয়ন বিএনপি’র দপ্তর সম্পাদক হুমায়ুন কবীর,পিংনা ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি মিজানুর রহমান,সাবেক সভাপতি হারুন অর রশীদ তালুকদার,যুবদলের সদস্য রবিন তালুকদার,পিংনা ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি রবিউল ইসলাম তালুকদার প্রমুখ।
এ ছাড়াও গত বৃহস্পতিবার (২৯ আগষ্ট) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে পিংনা ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারন সম্পাদকের আব্দুর রশীদ পিংনা ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সাধারন সম্পাদক সুভাষ সরকার কে চাদাবাজী, ও মানুষকে হুমকি ধামকি দিয়ে দলের ভাবমুর্তি বিনষ্টমুলক কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকার কথা বলেন। এ বিষয়টি সহজে মেনে না নিয়ে সুভাষ সরকার ক্ষিপ্ত হয়ে আব্দুর রশীদ এর বাড় তে যান। আব্দুর রশীদ কে বাড়ীতে না পেয়ে বাড়ীতে থাকা মেইয়া ব্রীজ পাড় গ্রামের আব্দুল মান্নান ও পদ্মপুর গ্রামের মিজানুর রহমান কে পিংনা ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সুভাষ সরকার মারধর করে।এক পর্যায়ে বিএনপি নেতা আব্দুর রশীদ এর মাতা রোকেয়া (৭০) ঘর থেকে বের হয়ে প্রতিবাদ এর করলে তাকে লাথী,চড় মেরে লাঞ্চিত করলে এর প্রতিবাদকারী জবেদা বেগম কেও গালিগালাজ ও নানা হুমকি দেয়ার একপর্যায়ে সুভাষের হাতে থাকা পিস্তল দিয়ে এলাকা আতংক করতে ৩ রাইন্ড পিস্তলের ফাকা গুলি ছোড়ে বলে বিএনপি নেতা আব্দুর রশীদ এর মাতা রোকেয়া (৭০) ও পাশের বাড়ীর লোকজন শব্দ শোনা ব্যাক্তিরা নিশ্চিত করেন। এ সময় আত্ম ভয়ে ফেলা যাওয়া ডিসকভার মোটর সাইকেল যার নং-ঢাকা মেট্রো – ল-২৫-২২৫৩ সুভাষ সরকার নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করেন আব্দুর রশীদ।
এ ব্যাপারে পিংনা ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সাধারন সম্পাদক সুভাষ সরকার কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে বলেন, পিংনা ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারন সম্পাদকের আব্দুর রশীদ এর বাড়ীতে আশ্রয়ে থাকা আমার পিতার হত্যকারী আওয়ামীলীগের লোক দেখে আমি ঠিক থাকতে না পেরে দরজায় ধাক্কা দিয়েছি মাত্র। আমি কাউকে মারপিট বা পিস্তলের ফাকা গুলি করি নাই। আমার বিরুদ্ধে তারা মিথ্যা বানোয়াট কথা ছড়াচ্ছে। এর নিন্দা জানাই। তিনি আরও বলেন আমি একটি মোটর সাইকেল এনে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির কাছে জমা দিয়েছি।
এ ব্যাপারে পিংনা ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারন সম্পাদকের আব্দুর রশীদ বলেন, পিংনা ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সাধারন সম্পাদক সুভাষ সরকার ও তার সহযোগীরা আমার বাড়ীতে এসে আমার মা কে ও দুই কর্মীকে মারধর ও মোটর সাইকেল নিয়ে গেছে। তিনি আরও জানান আমার বাড়ীতে হামলা ও ভাংচুরের চেষ্টা করা হয়েছে। এ ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ এসে ঘটনার বিষয়ে এলাকার লোকজনের জিজ্ঞাসাবাদ করে জেনে গেছে। আমি দল ও প্রশাসনের কাছে এর দৃষ্টান্তমুলক শাস্তীর দাবী করছি।
জানতে চাইলে পিংনা ইউনিয়ন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নাজমুল ইসলাম নাজু বলেন, পিংনা ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারন সম্পাদকের আব্দুর রশীদ এর কর্মকান্ড পছন্দ করে না। আমরা একটি হাট পেয়েছি। এ হাট থেকে খাজনার আদায় করা টাকা ৮৩০ জন নেতা-কর্মীর মধ্যে বন্টন দিয়ে থাকি। এ নিয়ে একটু নেতাদের মধ্যে কেউ অসন্তোষ্ট থাকতে পারে। এ নিয়ে নিজ দলের লোকজনের মধ্যে দলের ভাবমুর্তি নষ্ট না হোক এটা নিয়ে সবাইকে সোচ্চার থাকার জন্য অনুরোধ করছি।
এ ব্যাপারে সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মুশফিকুর রহমান বলেন, নিজ দলের নেতাদের মধ্যে দ্বন্দের ঘটনায় আব্দুর রশীদ এর বাড়ীতে দলের লোকজনকে মারধরের ঘটনার খবর পেয়ে তারাকান্দি তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ ঘটনায় কোন লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দোষীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.