সিপিএলে প্রথমবার দেখা গেলো ‘লাল কার্ড’

মন্থর ওভার-রেট এড়াতে এবার কঠোর নিয়ম করেছে ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (সিপিএল) কর্তৃপক্ষ। যার ফলে আম্পায়াররা লাল কার্ড পর্যন্ত দেখাতে পারবেন ক্রিকেটারকে।

সেটারই দেখা মিলল আজ সেন্ট কিটস এন্ড নেভিস প্যাট্রিয়টস ও ত্রিনবাগো নাইট রাইডার্স ম্যাচে। মন্থর ওভার রেটের নিয়ম ভাঙায় লাল কার্ড পেয়েছে ত্রিনবাগো। যেকারণে ইনিংসের শেষ ওভারের আগে মাঠ ছাড়তে হয়েছে ত্রিনবাগোর সুনীল নারাইনকে।

 

বাসেতেরে আগে ফিল্ডিংয়ে নেমে নির্ধারিত সময়ে ২০তম ওভার শুরু করতে পারেনি ত্রিনবাগো। তাই অধিনায়ক কাইরন পোলার্ডকে বিষয়টি বুঝিয়ে দেওয়ার পর লাল কার্ড প্রদর্শন করেন আম্পায়ার জাহিদ বাসারাথ।

ধারাভাষ্য কক্ষ থেকে তখন ইয়ান বিশপ বলেন, ‘এখানে ঐতিহাসিক একটি মুহূর্ত হতে পারে… ওহ লাল কার্ড। কেউই এই রংয়ের কার্ড দেখতে চায় না। তাদের (ত্রিনবাগো) এখন দশজন নিয়েই ফিল্ডিং করতে হবে। তাই কাউকে মাঠ ছাড়তে হবে এবং ৩০ গজ বৃত্তের বাইরে কেবল দুইজন ফিল্ডার থাকবে। ‘

শেষ ওভার শুরুর আগে নারাইনকে মাঠের বাইরে পাঠিয়ে দেন পোলার্ড। এর আগেই অবশ্য নিজের ওভারের কোটা শেষ করে ২৪ রানে ৩ উইকেট নেন নারাইন। একজন ফিল্ডার কম নিয়ে শেষ ওভার করতে হয় ত্রিনবাগোর বোলার ডোয়াইন ব্রাভোকে। শুধু তা-ই নয়, নিয়ম অনুযায়ী তখন ৩০ গজ বৃত্তের বাইরে ছিলেন মাত্র দুইজন ফিল্ডার।

এমন সুযোগের পুরো ফায়দা লুটেন প্যাট্রিয়টস ব্যাটার শেরফান রাদারফোর্ড। ব্রাভোর করা সেই ওভার থেকে ১৮ রান আদায় করেন তিনি। যদিও দিনশেষে পরাজিত দলের খাতাতেই নাম লেখাতে হয়েছে প্যাট্রিয়টসকে। তাদের ১৭৯ রানের লক্ষ্য ১৭ বল হাতে রেখেই পাড়ি দেয় ত্রিনবাগো। ৩২ বলে ৫ চার ও ৪ ছক্কায় ৬১ রানের ধুন্ধুমার ইনিংস খেলেন নিকোলাস পুরান। পোলার্ড ১৬ বলে ৩৬ ও ৮ বলে অপরাজিত ২৩ রানের ক্যামিও ইনিংসে ম্যাচ শেষ করে আসেন আন্দ্রে রাসেল।

জয়ের পর লাল কার্ড দেখানোর নিয়মকে হাস্যকর বলে অবিহিত করেন পোলার্ড। ত্রিনবাগো অধিনায়ক বলেন, ‘সত্যি বলতে এটি সকলের কঠোর পরিশ্রমকে মাটি করে দেবে। আমরা হলাম দাবার ঘুঁটির মতো এবং আমাদের যেভাবে চালাবে সেভাবেই চলছি। আমরা যতটা দ্রুত সম্ভব খেলব। এমন টুর্নামেন্টে যদি আপনাকে ৩০-৪৫ সেকেন্ড দেরির জন্য শাস্তি দেওয়া হয়, তা একদমই হাস্যকর। ‘

সিপিএলে নতুন নিয়ম অনুযায়ী, এই টুর্নামেন্টে বোলিং দলের ইনিংসের ১৮ তম ওভার শুরু করতে ৭২ মিনিট ১৫ সেকেন্ডের বেশি সময় লাগলে ৩০ গজ বৃত্তের বাইরে একজন ফিল্ডার কম নিয়ে খেলতে হবে। সেই ওভার শেষ করতে হবে ৭৬ মিনিট ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে। ৮০ মিনিট ৪৫ সেকেন্ডের মধ্যে শেষ করতে হবে ১৯তম ওভার। তবে সেই ওভার শুরুর আগে ফিল্ডিং দল সময়ের চেয়ে পিছিয়ে থাকলে তখন বৃত্তের বাইরে দুইজন ফিল্ডার কম থাকবেন।

ইনিংসের শেষ ওভারেও যদি একই ঘটনা ঘটে তখন একজন ফিল্ডারকে লাল কার্ড দেখিয়ে মাঠের বাইরে পাঠাবেন আম্পায়ার। কোন ফিল্ডার লাল কার্ড দেখবেন সেটা নির্বাচন করবেন ফিল্ডিং দলের অধিনায়ক। স্লো ওভার-রেটের কারণে সাধারণত ফিল্ডিং দলই শাস্তি পায়, তবে এবার ব্যাটিং দলেরও স্বস্তিতে থাকার উপায় নেই। আম্পায়ারের প্রথম এবং শেষ সতর্কতার পর কোনো ব্যাটিং দল যদি সময় নষ্ট করে তাহলে প্রতিটি সময় নষ্টের ঘটনায় তাদের পাঁচ রান কেটে নেওয়া হবে। ওভার রেটের ব্যাপারটি দেখভাল করবেন তৃতীয় আম্পায়ার। প্রতি ওভার শেষে অন-ফিল্ড আম্পায়ারদের মাধ্যমে অধিনায়কদের সময়ের ব্যাপারে অবগত করবেন তিনি।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.