চক্রের ভুয়া মামলায় এক মাস কারাবন্দি নিরপরাধ দিলু

রেজোয়ান বিশ্বাস

এমনিতেই করোনা আতঙ্কে পরিবার নিয়ে ভয়ে আছি। এর মধ্যেই মিথ্যা মামলায় প্রায় এক মাস হাজতে থাকতে হলো আমাকে। এই কারাবাসের দায় নেবে কে?’ গত মঙ্গলবার এভাবেই কালের কণ্ঠকে বলছিলেন সংঘবদ্ধ দুর্বৃত্ত চক্রের মিথ্যা মামলার শিকার নিরপরাধ সৈয়দ রফিকুল ইসলাম দিলু।

জানা গেছে, দিলুর বিরুদ্ধে আদালতে দায়ের করা মামলার বাদী, সাক্ষী এমনকি বাদীর ঠিকানাও ভুয়া। মামলা দায়ের করতে বাদীর নোটারিও জাল। মামলা দায়েরের পর আদালত আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ইস্যু করে পাঠান রাজধানীর ধানমণ্ডি থানায়। তবে আসামির ঠিকানা তেজগাঁও থানা এলাকার মধ্যে হওয়ায় ওই পরোয়ানা ধানমণ্ডি থানা থেকে পাঠানো হয় তেজগাঁও থানায়। এরপর তাঁকে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করলে তাঁর রিমান্ড অথবা জামিনের শুনানির দিন বারবার পরিবর্তন হতে থাকে। বেশ কয়েকবার জামিনের শুনানির দিন পরিবর্তন হওয়ায় তাঁকে ২৫ দিন কারাগারে থাকতে হয়।

সৈয়দ রফিকুল ইসলাম দিলুকে আসামি করে গত ৭ অক্টোবর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মামলা করেন জাকির হোসেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে দিলুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পেয়ে পুলিশ গত ১৩ অক্টোবর রাতে মনিপুরিপাড়ার ১৪৭/সি নম্বর বাড়ি থেকে আসামিকে গ্রেপ্তার করে পরদিন আদালতে পাঠায়। আদালত তাঁর জামিনের শুনানির সময় বাদীকে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন। বাদী হাজির হতে পারেননি বলে পরদিন ১৫ অক্টোবর পুনরায় জামিনের শুনানির দিন ধার্য করেন আদালত। ওই দিনও বাদী হাজির হননি। পরে ১৯ অক্টোবর ধার্য দিনেও বাদী হাজির না হলে আদালত আসামিকে জামিন দেন। জামিন পাওয়ার পর ওই মামলায় আসামি পুনরায় আদালতে হাজির হয়ে মামলার বাদী ও সাক্ষীদের দেখতে চান। কিন্তু তাঁদের দেখা আর পাননি তিনি।

এদিকে মামলায় বাদীর পক্ষে ওকালতনামায় স্বাক্ষর করা আইনজীবী খালিদ হোসেন আদালতকে জানান, বাদী জাকির হোসেনকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বাদীপক্ষের এই আইনজীবী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘জাতীয় পরিচয়পত্র ও অন্যান্য তথ্য নিয়ে কেউ এলে আমরা মামলা দায়েরে তাঁকে সহায়তা করি। এ ব্যাপারে মামলার বাদী জাল জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করেন কি না তা নিশ্চিত হওয়ার সুযোগ থাকে না।’

ঢাকার আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আবু বলেন, এই মিথ্যা মামলা থেকে আগে ভিকটিমকে অব্যাহতি দিতে হবে। তদন্ত করে দেখতে হবে, এই মিথ্যা মামলা দায়েরকারী চক্রটি কারা। মামলা দায়েরের সময় উচিত ছিল বাদীর জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি নেওয়া। এগুলোর কিছুই করা হয়নি।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.