সরিষাবাড়ীতে যত্রতত্র ইটভাটায় কমছে তিন ফসলি জমি

সরিষাবাড়ী প্রতিনিধি ঃ জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় সরিষাবাড়ী থেকে দিগপাইত উপশহরে যাওয়ার মহাসড়কের কুলঘেষে ইটবানানোর মাটি পাহাড়ের মত উচু করে রেখে যত্রতত্র ভাবে একাধিক ইটভাটা গড়ে উঠেছে। ভাটা নির্মাণে কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, সরকারি দপ্তর, ঘনবসতি ইত্যাদি এলাকাগুলোয় যেমন পরিবেশ বিপর্যয় হচ্ছে, তেমনই বায়ু দূষণজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ, নষ্ট হচ্ছে তিন ফসলি জমি, হারিয়ে যাচ্ছে গাছপালা।

এলাকাবাসী জানায় ভাটার মালিকরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কৃষকদের বিভিন্নভাবে ফাঁদে ফেলে ফসলি জমির মাটি ( টপ সয়েল) কেটে নিচ্ছে। ফলে উঁচু জমি পরিণত হচ্ছে জলাশয়ে। ভাটা মালিকরা প্রভাবশালী ও রাজনৈতিক মদদপুষ্ট হওয়ায় প্রকাশ্যেই পরিবেশ আইন লঙ্ঘন করলেও স্থানীয় প্রশাসনসহ পরিবেশ অধিদপ্তর কোনো ব্যবস্থাই নিচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।
ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন ( নিয়ন্ত্রণ ) আইন ২০১৩-তে স্পষ্টভাবে বলা আছে, ইটভাটায় ফসলি জমির উপরের মাটি ব্যাবহার করলে তার শাস্তি দু’বছর কারাদণ্ড ও ২ লাখ টাকা জরিমানা। ওই অপরাধ দ্বিতীয়বার করলে শাস্তি ২-১০ বছরের জেল এবং ২-১০ লাখ টাকা জরিমানা। অনুমোদন না নিয়ে ইটভাটা স্থাপন করলে শাস্তি ১ বছরের কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা। আইনে আরও বলা আছে, আবাসিক, জনবসতি, সংরক্ষিত এলাকা, বাণিজ্যিক এলাকা, বনভূমি, জলাভূমি এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার এলাকায় ইটভাটা স্থাপন করলে একই শাস্তি প্রযোজ্য হবে।

ইটভাটার কারণে সবচেয়ে বেশি দুষিত হয় বাতাস। ইটভাটার ধোঁয়ার কারণে গাছ, ফলমূল ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। মানুষ সর্দি- কাশি,শ্বাস- প্রশ্বাসের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। ইট পোড়ানো কয়লা থেকে মারাত্মক ক্ষতিকর কার্বন- মনোক্সাইড নির্গত হয়। এতে স্বাস্থ্য ও পরিবেশের বিপর্যয় ঘটছে।
জীববৈচিত্র্য ধ্বংস, জনস্বাস্থ্যের ক্ষতি এবং খাদ্য ঘাটতি সত্ত্বেও প্রশাসনের নিরবতায় হাজার হাজার একর তিন ফসলি জমিতে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে ইটভাটা। এতে শুধু কৃষকরাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে না, ক্ষতি হচ্ছে, জাতি জীববৈচিত্র্যসহ পরিবেশের। এ পরিস্থিতি থেকে উদ্দার পেতে যত্রতত্র ইটভাটা তৈরি রোধে প্রশাসনের কঠোর ভূমিকা কাম্য।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.