হাড়ি-পাতিল পিটিয়ে মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ

মিয়ানমার এখন সেনা সরকারের কবজায়। দেশটির সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের প্রথম দিনেই অং সান সু চি নেতৃত্বাধীন সরকারের অধিকাংশ সদস্যকে বরখাস্ত করে নতুন মন্ত্রী নিয়োগ করেছে। তবে মিয়ানমারের রাস্তাঘাটে খুব একটা বেশি পরিবর্তন চোখে পড়ে না। গত সোমবারের সেনা অভ্যুত্থানের পর মঙ্গলবার (২ ফেব্রুয়ারি) সামরিক অভ্যুত্থানের দ্বিতীয় দিনে মিয়ানমারের বাসিন্দারা নাগরিক অবাধ্যতা আন্দোলন শুরু করেছেন। এসময় তারা গাড়ির হর্ন, থালাবাটি ও হাড়িপাতিল পিটিয়ে মিলিটারি নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান।

মিয়ানমারের পুরষ্কার বিজয়ী সাংবাদিক কেপ ডায়মন্ড তার টুইটার পোস্টে এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন। যেই ভিডিওতে দেখা যায়, মিয়ানমারের সাধারণ জনগণ তাদের বাড়ির বারান্দায় এসে থালা-বাসন পেটাচ্ছেন। অপর একটি ভিডিওতে দেখা যায়, রাস্তায় সাধারণ মানুষ গাড়ির হর্ন বাজিয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।

এদিন রাতে মোমবাতি জ্বালানো, রান্নার পাত্র এবং গাড়ির হর্ন বাজিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে বাসিন্দারা। দেশটিতে ঐতিহ্যগতভাবে ধাতব বালতি বাজানোর মাধ্যমে শয়তানের আত্মা তাড়ানোর প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

এদিকে মিয়ানমারের ৩০টি শহরের ৭০ হাসপাতাল ও চিকিৎসা বিভাগের কর্মীরা বুধবার কাজ বন্ধ করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। দেশটির বড় শহরগুলোর স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের চিকিৎসক, ফিজিশিয়ানসহ সেবাকর্মীরা শান্তিপূর্ণভাবে সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

সেনা শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের অংশ হিসেবে অনেকেই তাদের চাকরি ছেড়েছেন। অনেক চিকিৎসক রোগীর কথা বিবেচনায় থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও তারা জান্তা সরকারের নতুন মন্ত্রীসভাকে স্বীকৃতি দেবে না বলে জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তারা রেড রিবন মুভমেন্ট মিয়ানমার ২০২০ নামে কর্মসূচিও ঘোষণা করেছে।

অনলাইন কিংবা অফলাইনে এই কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা জানিয়েছে ইয়াঙ্গুনের বাসিন্দারাও। তারা নিজেদের প্রোফাইল পিকচার বদলে লাল করেছে কিংবা তিন আঙুল দিয়ে স্যালুট দিয়েছে। এই কর্মসূচিটি মূলত সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সম্পর্কিত ব্যবসা এবং সেবা পরিহার কর্মসূচি।

সোমবার ভোরে নির্বাচিত সরকারকে হাটিয়ে ক্ষমতা দখল করে নেয় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। দেশটির ক্ষমতাসীন দলের প্রধান অং সান সু চিসহ তাদের অধিকাংশ নেতৃবৃন্দকে আটক করা হয়েছে।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.