রাজশাহীতে ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণের মামলায় চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র

শামসুজ্জোহা বাবু

রাজশাহী প্রতিনিধি

শিক্ষানবীশ নারী আইনজীবীকে ধর্ষণ এবং এর ভিডিও ধারণের মামলায় রাজশাহীতে এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল হয়েছে। তার নাম ডা. এএসএম সাখাওয়াত হোসেন রানা (৪২)। তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের চক্ষু বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার। আর ভুক্তভোগী ওই নারী (২৭) একজন শিক্ষানবীশ আইনজীবী। চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলায় তার গ্রামের বাড়ি। তিনি রাজশাহী মহানগরীর রাজপাড়া মহল্লায় বান্ধবীর বাসায় সাবলেট থাকতেন। আর ডা. রানা ভাড়া থাকতেন নগরীর টিকাপাড়া এলাকায়। তার গ্রামের বাড়ি নওগাঁর পোরশায়।

গত ১২ নভেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে ডা. রানার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। নগরীর রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদাত হোসেন খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গত ২৫ জুলাই গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে ডা. রানা কারাগারে। এরই মধ্যে মামলার তদন্ত শেষ হয়েছে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল হয়েছে।

অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, ডা. রানা বিবাহিত। তার তিনটি সন্তান রয়েছে। আর ভুক্তভোগী নারী অবিবাহিত। তাদের দুজনেরই বই লেখার অভ্যাস রয়েছে। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাজশাহীর এক ছাপাখানায় তাদের পরিচয়। সেদিনই ডা. রানা ওই নারীর ফোন নম্বর নেন। তার সঙ্গে কথাবার্তা শুরু করেন। ফেসবুকেও তাদের মধ্যে কথাবার্তা হতো। এরই মধ্যে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তারপর নানা কায়দায় বিশ্বাস স্থাপন করে এই চিকিৎসক ওই নারীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তোলেন। কিন্তু কিছুতেই বিয়ে করছিলেন না।

এ কারণে ওই নারী তাকে এড়িয়ে যেতে শুরু করেন। কিন্তু গত ২৫ জুলাই ডা. রানা ওই নারীর ভাড়া বাসায় গিয়ে তাদের ঘনিষ্ঠ মূহুর্তের একটি ভিডিওচিত্র দেখিয়ে বলেন, তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক চালিয়ে যেতে হবে। তা না হলে এই ভিডিওচিত্র ছড়িয়ে দেয়া হবে। এভাবে ভয় দেখিয়ে ডা. রানা ওই নারীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। এরপর ওই ভিডিওচিত্র নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। তখন ওই নারীর বান্ধবী বাইরে থেকে ঘরের দরজা আটকিয়ে জাতীয় জারুরি সেবার ৯৯৯ নম্বরে ফোন করেন। কিছুক্ষণ পর নগরীর রাজপাড়া থানা পুলিশ ডা. রানাকে সেখান থেকে আটক করে আনেন। এরপর ওই নারী বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে থানায় পর্নোগ্রাফী এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।

রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদাত হোসেন খান বলেন, আটকের তিন অভিযুক্ত চিকিৎসকের কাছ থেকে ওই নারীকে ধর্ষণের ভিডিওচিত্র উদ্ধার করা হয়। সেটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হয়েছিল। ভিডিও’র সঙ্গে ওই নারী এবং চিকিৎসকের তিন কপি করে ছবিও পাঠানো হয়েছিল। পরীক্ষার পর সিআইডি মতামত দিয়েছে যে, ভিডিও’র দুই নারী-পুরুষ এবং পাঠানো নারী-পুরুষের ছবির মধ্যে মিল রয়েছে। ভিডিওটি এডিট করা নয়। এছাড়া

ডা. রানাও জিজ্ঞাসাবাদে অভিযোগ স্বীকার করেছেন। তাই তদন্ত কর্মকর্তা তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.