বাড়ি ফিরে ঘুম, রহস্যময় ৮ মিনিটেই শেষ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীর জীবন!

এস.এম আব্দুর রাজ্জাক

ঢাকা থেকে কুমিল্লায় বাড়ি ফিরে ঘুম, দুপুর দেড়টার দিকে দোকান থেকে শ্যাম্পু কেনার কথা বলে বাইরে বের হন। একটু পরেই জানা যায়, পাশের নির্মাণাধীন ভবনের ৯তলা থেকে লাফ দিয়ে ‘আত্মহত্যা’ করেছেন জান্নাতুল হাসিন (২৪) নামের এক তরুণী। তবে তাকে হত্যা করা হয়েছে নাকি তিনি আত্মহত্যা করেছেন তা এখনও স্পষ্ট নয়।

বেশ ছটফটে স্বভাবের ছিলেন জান্নাতুল হাসিন। লেখাপড়ার পাশাপাশি একটি ব্যাংকে শিক্ষানবিশ ছিলেন। কিন্তু মাত্র ৮ মিনিটে কী ঘটল ফুরফুরে মেজাজের এ মেয়েটির জীবনে, যে সময়ের মধ্যে তাকে লাশ হতে হলো। তবে এ রহস্য এখনো জানা যায়নি। নিহত জান্নাতুল হাসিনের বাড়ি কুমিল্লা নগরীর ধর্মসাগর পশ্চিম পাড়ায়। তার বাবার নাম ইদ্রিস মেহেদী।

জানা গেছে, ঢাকায় বোনের বাসায় থাকতেন জান্নাতুল হাসিন। তিনি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি (বিইউবিটি) থেকে স্নাতক শেষে মিরপুরে মার্কেন্টাইল ব্যাংকে তিনি শিক্ষানবিশ ছিলেন। সোমবার রাতে তিনি কুমিল্লায় বাড়িতে যান। ঘুম থেকে উঠে দুপুর পর্যন্ত তিনি বাসায় ছিলেন। দুপুর দেড়টার দিকে দোকান থেকে শ্যাম্পু কেনার কথা বলে তিনি বাইরে বের হন। একটু পরেই জানা যায়, পাশের নির্মাণাধীন ভবনের ৯ তলা থেকে লাফ দিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেছেন।

মঙ্গলবার (১ ডিসেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে কুমিল্লা নগরীর ঝাউতলায় সিটি কর্পোরেশন কার্যালয়ের পেছনে ১০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের অফিসের পাশে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, বাবা ইদ্রিস মেহেদী পরিবার নিয়ে নগরীর ঝাউতোলায় থাকেন। তার তিন মেয়ে এবং এক ছেলে। নিহত জান্নাতুল হাসিন মেজো মেয়ে। তিনি ঢাকায় গার্মেন্ট ব্যবসা করেন।

নিহতের বাবা ইদ্রিস মেহেদী জানান, বড় মেয়ে জান্নাতুল এবং স্বামী দু’জনই চাকরিজীবী। হাসিন তাদের সঙ্গেই থাকতেন। মিরপুর-৬ এ মার্কেন্টাইল ব্যাংকের একটি শাখায় তিনি শিক্ষানবিশ ছিলেন।

তিনি আরো জানান, সোমবার রাতে ঢাকা থেকে কুমিল্লার নিজ বাসায় আসে জান্নাতুল। কোনো কারণে তার মন খারাপ ছিল। মঙ্গলবার দুপুরে জানতে পারি নয়তলা ভবনের ছাদ থেকে নিচে পড়ে গেছে আমার মেয়ে। তবে জান্নাতুল আত্মহত্যা করেছিল নাকি অন্য কিছু ঘটছে তা এখনো জানতে পারিনি।

১০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মঞ্জুর কাদের মনি বলেন, আমি অফিসে বসেছিলাম। হঠাৎ একটি বিকট শব্দ পেয়ে বাইরে যাই। বের হতেই গোল্ড সিলভার হোমস ভবনের নিচে জান্নাতুলের রক্তাক্ত লাশ পড়ে আছে।

গোল্ড সিলভার হোমস ভবনের নিরাপত্তারক্ষী হাবিবুর রহমান বলেন, বাসায় ঢোকার সময় কার কাছে যাবে জানতে চাইলে জান্নাতুল জানান, ছয়তলায় রাফি আঙ্কেলের মেয়ে সোহানার কাছে যাবেন। ৮-১০ মিনিট পরই দেখি তার লাশ নিচে পড়ে আছে।

কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মো. আনোয়ারুল হক জানান, মেয়েটি আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এর পেছনে অন্য কোনো ঘটনা আছে কি না তা খতিয়ে দেখছি। লাশ উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.