বন্ধুকে হত্যার পর মায়ের কাছ থেকে মুক্তিপণ নিতে গিয়ে ধরা খুনী

এস.এম আব্দুর রাজ্জাক

নিখোঁজের ১৫ দিন পর শিকারীপাড়া তোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র মো. হৃদয় হোসেনের (১৭) লাশ উদ্ধার করা হয়। একটি পরিত্যক্ত পুকুর থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের বন্ধু মো. শাওন মোল্লা জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করেন। নিহত হৃদয় হোসেন উপজেলার ঘোষাইল এলাকার সৌদি প্রবাসী নজরুল ইসলামের ছেলে। গ্রেফতার শাওন মোল্লা উপজেলার আর ঘোষাইল এলাকার সাইদুল মোল্লার ছেলে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ১৪ নভেম্বর বিকালে হৃদয় বাসা থেকে বের হয়। রাত ১০টা বেজে গেলেও সে বাসায় না ফেরায় তার মা ফোন দিলে হৃদয়ের মোবাইল বন্ধ পান। ছেলের সন্ধানে মা ময়না বেগমসহ তার সব আত্মীয়-স্বজন অনেক খোঁজাখুঁজি করেন। পর দিন ঢাকার নবাবগঞ্জ থানায় একটি সারারণ ডায়রি করেন মা। ২২ নভেম্বর হৃদয়ের ফোন থেকে তার মায়ের মোবাইলে ফোন আসে। ফোনে হৃদয়কে জীবিত পেতে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। বিষয়টি কাউকে জানালে হৃদয়কে হত্যার হুমকি দেওয়া হয় ফোনে। সন্তানের বিপদের কথা চিন্তা করে ১০ হাজার টাকা বিকাশ করেন হৃদয়ের মা। পুলিশকেও ঘটনাটি জানান মা ময়না বেগম।

একইভাবে ২৭ নভেম্বর আবার টাকা পাঠাতে বললে মা বিষয়টি পুলিশে জানান। তখন পুলিশের পরামর্শে টাকা পাঠানো হয়। তখন ওই বিকাশ নম্বরটি ট্র্যাকিং করে উপজেলার বারুয়াখালী বাজারের একটি দোকানের সন্ধান পায় পুলিশ। সন্ধ্যায় দোকান থেকে টাকা তুলতে এলে শাওন মোল্লা নামে এক যুবককে আটক করে পুলিশ। পরে তার দেওয়া তথ্য মতে জয়কৃষ্ণপুরের মহিন বেপারীর পরিত্যক্ত পুকুর থেকে হৃদয়ের গলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

এ বিষয়ে নিহতের মা ময়না বেগম বলেন, আমার ছেলেকে শাওন ও তার দলের লোকজন পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। আমি ওদের ফাঁসি চাই।

এ বিষয়ে নবাবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি শেখ সিরাজুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শাওন স্বীকার করেছেন বন্ধু হৃদয়কে পূর্বশত্রুতার জেরে ১৪ নভেম্বর মেরে জয়কৃষ্ণপুরের মহিন বেপারীর পরিত্যক্ত পুকুরের কচুরিপানার নিচে লাশ লুকিয়ে রাখেন। তবে কীভাবে হৃদয়কে হত্যা করা হয়েছে, কয়জন হত্যা করেছেন এ বিষয়ে কিছু জানাননি।

পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় দু’জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেছেন নিহতের মা মায়না বেগম। প্রধান আসামি শাওনের চার দিনের রিমান্ড চেয়ে রবিবার দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে। রিমান্ড শেষে আরো তথ্য জানা যাবে। লাশ মায়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.