সরিষাবাড়িতে অবৈধ বালু উত্তোলনে হুমকির মূখে বসতি ফসলি জমি ব্রীজ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

গনি সরকার,সরিষাবাড়ি,জামালপুরঃ

জামালপুরের সরিষাবাড়ির উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া যমুনা ও ঝিনাই নদীতে ড্রেজার বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় হুমকিতে রয়েছে নদী তীরবর্তী ফসলি জমি, জনবসতি, ব্রীজ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘদিন প্রশাসনিক ভূমিকা না থাকায় স্বার্থান্বেসী বেপরোয়া বালু ব্যবসায়ীদের দুরাত্ম দিন দিন বেড়েই চলেছে।

এলাকা ঘুরে জানা যায়, সরিষাবাড়ির দক্ষিনাঞ্চলের পুরাতন জগন্নাথগঞ্জ ঘাট থেকে পিংনা ইউনিয়নের প্রান্ত সীমানা পর্যন্ত যমুনা নদীতে তিন কিলোমিটার জুড়ে বসানো হয়েছে ৪/৫টি ড্রেজার মেশিন। প্রতিদিনই বালু উত্তোলন করে বিশালাকার স্তুপ করে রাখা হয়। অবৈধ বালু ব্যবসায়ী সিন্টিকেট উত্তোলিত বালু চড়া মূল্যে দূর দূরাতেœ বিক্রি করে কামিয়ে নিচ্ছে কাড়ি কাড়ি টাকা। শক্তিশালী বালু খেকো সিন্টিকেটের ভয়ে স্থানীয়রা নিঃশ্চুপ। নদী তীর ঘেষে গড়ে উঠা পিংনা ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, পিংনা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র, সুজাত আলী ডিগ্রি কলেজ, পিংনা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, শতবর্ষী পিংনা উচ্চ বিদ্যালয়, পিংনা গো-হাট ও কবি কায়কোদের স্মৃতি বিজড়িত রসপাল জামে মসজিদসহ অসংখ্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হুমকির মূখে। যমুনা নদীর উত্তর পাশ দিয়ে প্রবাহিত ঢাকা অভিমূখে পাকা রাস্তাটি প্রতি বছরই বন্যার কবলে কম বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিঘিœত হয় জন ও যান চলাচল।

সরকারী অর্থে যমুনা নদী তীর রক্ষা বেড়ি বাধ নির্মান করা হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। অবৈধ বালুব্যবসায়ীদের ক্রমাগত বালু উত্তোলনের ফলে চরম হুমকিতে প্রতিষ্ঠানসহ দীর্ঘ এলাকাটি। অপর দিকে মহাদান ইউনিয়নের সেঙ্গুয়া বাজারের পশ্চিম পাশে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করায় বিলিন হওয়ার হুমকিতে রয়েছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয় এবং পশ্চিম পাশে ঝিনাই নদীর উপর স্থাপিত কোটি টাকা ব্যয়ে নব নির্মিত ব্রীজ। পৌরসভার মাগুরিয়া পাড়া ঈদ গা মাঠের দক্ষিণে অদূরে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করায় ঈদ গা মাঠ পপুলার সড়ক সেতু, বাউসি রেলওয়ে ব্রীজ এবং মাগুরিয়া পাড়া-কামরাবাদ গ্রাম রয়েছে হুমকির মূখে। এ ছাড়াও পারপাড়া গ্রামের দক্ষিণে ঝিনাই নদীতে এবং রেলি ঘাটের উত্তর পাশে বসানো হয়েছে ড্রেজার মেশিন।

বিষয়টি সরিষাবাড়ি থানার ওসি মাজেদুর রহমানকে মুঠো ফোনে জানানো হলে তিনি বলেন ইউএিনও কে ফোন দেন। ইউএিনও শিহাব উদ্দিন আহমেদকে অবগত করা হলে তিনি বলেন ব্যস্ত রয়েছি তবে বিষয়টি দেখব।

সরিষাবাড়ির উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া বিভিন্ন নদীতে প্রতি বছরই ড্রেজার মেশিন বসিয়ে উত্তোলিত হয় বালু। অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন করায় প্রবল বন্যায় নদী তীরবর্তী বসতিদের পোহাতে হয় চরম দূর্ভোগ। বাধাগ্রস্থ হয় সরকারী উন্নয়ন কর্মকান্ডে। সরকারের প্রতি স্থানীয়দের দাবী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে জনবসতি রক্ষাসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং ব্রীজ ও রাস্তাঘাট রক্ষার।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.