ব্রিটেনে মোটাদের সাহায্যে দিনে তিন ফোন পান উদ্ধারকর্মীরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :

ব্রিটেনে মোটাদের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। স্থুলকায় সমস্যা ক্রমশ প্রকট হচ্ছে। সেই বিষয়টি তুলে ধরেই একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ ট্যাবলওয়েড দ্য সান। সেখানে জানানো হয়েছে, ব্রিটেনের উদ্ধারকর্মীরা দিনে অন্তত তিনবার এমন ফোন পান যেখানে স্থুলকায় কোনো মানুষ প্রচণ্ড সমস্যায় পড়েছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থুলকায় মানুষরা ঘরের বাইরে বের হতে বা অন্যান্য সাহায্যের জন্য দিনে অন্তত তিনবার ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের ফোন করেন। গত বছর ১২ হাজার ৯টি এমন কল পেয়েছেন ব্রিটিশ উদ্ধারকর্মীরা।

ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, গত তিন বছরে স্থুলকায় মানুষের উদ্ধারকর্মীদের নিকট সাহায্য চেয়ে ফোন করার প্রবণতা দ্বিগুণ বেড়েছে। ২০১৬ সালে এই ফোনকলের পরিমাণ ছিল ৫৮৭টি।

প্রায় সময়ই অ্যাম্বুলেন্স স্টাফ উদ্ধারকর্মীদের ফোন করে জানান যে, একজন ব্যক্তির দ্রুত চিকিৎসা সাহায্য লাগবে কিন্তু স্থুলতার কারণে তারা তাকে অ্যাম্বুলেন্সে তুলতে পারছেন না বা ঘর থেকে বের করতে পারছেন না। এসব লোকেই বেশিরভাগই বিশালকার শরীরের জন্য তেমন নড়াচড়া করতে পারেন না।

উদ্ধারকর্মীদের কাছে এমন সব বিশেষ জিনিসপত্র রয়েছে যেগুলো দিয়ে স্থুলকায় মানুষদের সাহায্য করা হয়। অনেক সময় দেয়াল বা দরজা ভেঙে তাদের উদ্ধার করতে হয়। এসব মানুষ বেশিরভাগ সময় বিছানায়, সোফায় বা বাথরুমে আটকা পড়েন।

গত মাসে জন গ্রোভ নামে ৫১ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে ছয় তলা থেকে নামাতে ঘাম ছুটে গিয়েছিল উদ্ধারকর্মীদের। ঘরের জানালা দিয়ে ছয় ঘণ্টা অভিযানের পর তাকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়। ওই অভিযানে আনুমানিক ১০ হাজার পাউন্ড (১০ লাখ টাকা) খরচ হয়। দুই বছর ধরে ওই ব্যক্তি ঘরের মধ্যেই ছিলেন। তাকে উদ্ধার করতে স্বাস্থ্য ও উদ্ধারকর্মীদের একটি দল গঠন করা হয়।

২০১৫ সালের জুন মাসে ব্রিটেনের সবচেয়ে স্থুলকায় ব্যক্তি কার্ল থম্পসনকে উদ্ধার করতে জলবাহী সরঞ্জাম ব্যবহার করেছিলেন উদ্ধারকর্মীরা। বছরে মোটা মানুষদের উদ্ধারে ব্রিটেনের খরচ হয় প্রায় ৫৪ কোটি টাকা (৫ লাখ পাউন্ড)।

স্থুলকায় মানুষদের সহযোগীতা জোরদার করতে প্রশিক্ষণে নতুনত্ব এনেছেন উদ্ধাকর্মীরা। তারা রাবার ও ধাতব বল ভর্তি ডামি নিয়ে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন।

বর্তমানে ব্রিটেনে প্রায় দুই মিলিয়ন (২০ লাখ) প্রাপ্তবয়স্ক মারাত্মক স্থুলতায় ভুগছেন। জাতীয় স্থূলত্ব ফোরামের ট্যাম ফ্রাই অভিযোগ করে বলেন, স্থুলতা কমাতে এবং এর বিপক্ষে যথেষ্ট ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।

তিনি সতর্ক করে বলেন, সামনের দিনগুলোতে এই সংখ্যা আরও মারাত্মকহারে বাড়বে।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.