পরিকল্পনা বাস্তবায়ন ছাড়া একসঙ্গে জড়ো হন না তারা

 

অনলাইন ডেস্ক:

সম্প্রতি কোনো একটি ‘লোন উলফ’ হামলার পরিকল্পনা অনুযায়ী রাজধানীর উত্তরা এলাকায় আনসার-আল ইসলামের কয়েকজন একসঙ্গে মিলিত হয়। তবে বাস্তবায়নের আগেই পরিকল্পনা ভেস্তে দেন র‌্যাপিড অ্যাকশান ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) সদস্যরা।

শনিবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক মো. মোজাম্মেল হক।

তিনি বলেন, নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সদস্যরা বিভিন্ন গোপন অ্যাপসের মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করে থাকেন। বড় কোন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন ছাড়া সাধারণত তারা কখনো একসঙ্গে জড়ো হয় না। নিজেদের মধ্যে পরিচিত না হয়েই তারা কাটআউট পদ্ধতিতে চলাচল করে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।

এর আগে শুক্রবার দিবাগত রাতে রাজধানীর উত্তরা, গাজীপুর ও সাতক্ষীরার শ্যামনগর এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে আনসার আল ইসলামের ছয় সদস্যকে আটক করে র‌্যাব-৪। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ উগ্রবাদী বই, মোবাইল, ল্যাপটপ ও জঙ্গিবাদী ট্রেনিংসহ বিভিন্ন কনটেন্ট জব্দ করা হয়।

আটকরা হলেন- শফিকুল ইসলাম ওরফে সাগর ওরফে সালমান মুক্তাদির (২১), ইলিয়াস হাওলদার ওরফে খাত্তাব (৩২), ইকরামুল ইসলাম ওরফে আমীর হামজা (২১), আমীর হোসাইন ওরফে তাওহীদি জনতার আর্তনাদ (২৬), শিপন মীর ওরফে আব্দুর রব (৩৩) ও ওয়ালিউল্লাহ ওরফে আব্দুর রহমান (২৫)।

র‌্যাব অধিনায়ক বলেন, আটক সবাই ২-৫ বছর ধরে আনসার ইসলামের সঙ্গে জড়িত। তারা গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার বিপক্ষে। অর্থাৎ তারা যে কোনো মূল্যে কথিত ইসলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠা করতে চায়। আর এ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে যারা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে বলে মনে করছে তাদেরই উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করে জঙ্গি সংগঠনটি।

র‌্যাব-৪ অধিনায়ক আরও বলেন, অতীতের ঘটনা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, আনসার আল ইসলামের সদস্যরা টার্গেটকৃত ব্যক্তিকে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে হামলা চালায় না। তারা এক্ষেত্রে সাধারণত চাপাতি ব্যবহার করে থাকে। সদস্যরা কোনো বড় পরিকল্পনা বাস্তবায়ন ছাড়া কখনও এক হয় না। একে অন্যের সঙ্গে গোপন অ্যাপসের মাধ্যমে যোগাযোগ করে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।

আনসার আল ইসলাম কর্তমানে মূলত দুই ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। প্রথমত, মোটিভেশনাল কার্যক্রমের মাধ্যমে সদস্য বৃদ্ধিতে কাজ করে যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও এ ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। দ্বিতীয়ত, তারা মনে করে সবাইকে হত্যা করে ইসলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। তবে যারা সরাসরি ইসলামী রাজনীতির বিরোধীতা করে, যারা নাস্তিক তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয় সংগঠনের সদস্যরা।

বড় ধরনের কোন নাশকতা ‘লোন ওলফ’ হামলার পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা উত্তরায় এক হয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, অতীতের কোনো কর্মকাণ্ডে তারা জড়িত ছিল বলে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেনি। তবে এসব ঘটনাকে তারা ‘জায়েজ’ বলে মনে করে।

সুনির্দিষ্ট কোথায় হামলা করা হতো, এ বিষয়ে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে বিস্তারিত জানা যাবে বলেও জানান তিনি।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.