আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা জাবি শিক্ষার্থীদের

নিউজ ডেস্ক:
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের অপসারণ দাবি, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণার প্রতিবাদে ফের আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা।

বুধবার সকাল ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুরাদ চত্বর থেকে একটি মিছিল বের করেন আন্দোলনকারীরা। মিছিলটি মেয়েদের হলের দিকে গেলে ছাত্রীরা এতে অংশ নেন।

পরে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের গেটের তালা ভেঙে ওই হলের মেয়েরা মিছিলে অংশ নেন। মিছিলের আগে ওই হলের গেটে প্রশাসন তালা লাগায় বলে অভিযোগ করেন ওই হলের মেয়ে শিক্ষার্থীরা।

পরে মিছিলটি মেয়েদের হল ঘুরে পরিবহন চত্বরের দিকে অগ্রসর হয়। তারা আবার মুরাদ চত্বরে এসে সংহতি সমাবেশে যোগ দেবে। এখানে আন্দোনকারীরা সংহতি সমাবেশের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

এদিকে পরিস্থিতি সামাল দিতে ও কোনো রকম অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটতে দিতে ক্যাম্পাসে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

ভিসি ফারজানা ইসলামের বাসভবন ঘিরেও তাকে নিরাপত্তা দিতে মোতায়ন করা হয় প্রায় ১০০ পুলিশ। এর আগে মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা ও বিকাল ৪টার মধ্যে হলত্যাগের নির্দেশের পর পরই বিভিন্ন হল থেকে ছাত্রছাত্রীরা মিছিল নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে জড়ো হন।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে তারা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও সিনেট সদস্যরা যোগ দেন।

এর আগে বিকাল পৌনে ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান পরিস্থিতেতে উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক জরুরি সিন্ডিকেটসভায় বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। একই সঙ্গে বিকাল ৪টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হলত্যাগের নির্দেশ দেয়া হয়।

এর আগে মঙ্গলবার সকালে দুর্নীতির অভিযোগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলামের অপসারণ দাবিতে চলমান আন্দোলনে হামলা করেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।

এতে নারী শিক্ষার্থীসহ অন্তত ৩৫ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

হামলার একপর্যায়ে পুলিশের সামনেই আন্দোলনকারী শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।

দুর্নীতির অভিযোগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) উপাচার্যের অপসারণ দাবিতে চলমান অবরোধে টানা ১০ দিন প্রশাসনিক কার্যক্রম স্থগিত ছিল।

সন্ধ্যা সোয়া ৭টা থেকে ভিসির বাসভবন অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা। এ সময় জাবি ভিসি বাসাতেই ছিলেন।

গত ২৪ অক্টোবর থেকে গত সোমবার পর্যন্ত ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে আন্দোলনকারীরা টানা ১০ দিনের মতো নতুন ও পুরনো দুটি প্রশাসনিক ভবনই অবরোধ করে রেখেছে।

ফলে এই ১০ দিন ভিসি, দুই প্রোভিসি, কোষাধ্যক্ষ, রেজিস্ট্রারসহ কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীই প্রশাসনিক ভবনে প্রবেশ করতে পারেননি। কার্যত অচল হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম। তবে একাডেমিক কার্যক্রম অনেকটা স্বাভাবিক ছিল।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.