টাঙ্গাইলের গোপালপুরে ছাত্রকে বেত্রাঘাত করে জখম করল শিক্ষক

মো: আ: হামিদ 

স্কুল ড্রেস না পড়ায় ও তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে টাঙ্গাইলের গোপালপুরে ১০ম শ্রেণিতে পড়ুয়া সাব্বির হোসেন নামের এক ছাত্রকে বেধড়ক বেত্রাঘাত করে শরীরের বিভিন্ন অংশে জখম করার অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষক আব্দুল জলিলের বিরুদ্ধে।

বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) সকাল ১০ টার দিকে উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের মির্জাপুর হাতেম আলী বি.এল. উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

পরিবার ও সাব্বিরের সহপাঠীদের সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ে সাব্বিরসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী স্কুল ড্রেস না পড়ে আসায় প্রধান শিক্ষক আব্দুল জলিল তাদের কে বেশ কিছু সময় দাঁড় করিয়ে রাখে। পরে তার সাথে থাকা সবাইকেই কমবেশী বেত্রাঘাত করেন। এক পর্যায়ে সাব্বির তার সমস্যার কথা বলে মাফ করে দেয়ার জন্য অনুরোধ করেন শিক্ষকদের কাছে। শিক্ষক সাব্বিরের অনুরোধ না রেখে ক্ষিপ্ত হয়ে বেধড়ক বেত্রাঘাত করতে থাকলে বেত ভেঙে যায়। তাতেও সে ক্ষান্ত না হয়ে অন্য ক্লাসরুম থেকে আরো একাধিক বেত একত্র করে ৩০ টি বেত্রাঘাত করে সাব্বির শরীরে। এতে করে সাব্বিরের শরীরে বিভিন্ন অংশে জখম হয়ে যায়।

এদিকে, প্রধান শিক্ষকের এমন নিষ্ঠুর আচরণে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বেত্রাঘাতের ঘটনায় তাৎক্ষণিক নিন্দা জানিয়ে প্রধান শিক্ষক আব্দুল জলিলের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়ে আসে। তারপর অভিযোগ তুলে নিতে বিদ্যালয়ের ৪ জন শিক্ষক সাব্বিরের পরিবারকে অনুরোধ জানায়।

সরেজমিনে (৫ অক্টোবর) শনিবার দুপুরে সাব্বির হোসেনের বাড়ী গেলে তার মা ও বড় ভাই এই শিক্ষকের বিচার দাবি জানিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, প্রধান শিক্ষক আব্দুল জলিল সাব্বির কে বেধড়ক বেত্রাঘাত করে পিটিয়ে জখম করার ঘটনায় তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। এসময় কথা হয় অসুস্থ সাব্বিরকে দেখতে আসা তার সহপাঠীদদের সাথে তারা বলেন, জলিল স্যার অল্পতেই যেকোন তুচ্ছ ব্যাপারে ক্ষিপ্ত হয়ে যান। প্রায়ই আমরা শিক্ষার্থীদের উপর অমানবিক নির্যাতন করে থাকেন। স্যারের কাছে এ নির্যাতন নতুন ঘটনা নয়। তিনি সুযোগ পেলেই পিটায় ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এছাড়াও মেয়েদের শরীরের আপত্তিকর স্থানেও বেত্রাঘাত করেন যা তারা লজ্জায় বাড়ীতে বলতেও পারেনা।

এ ঘটনায় উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের মির্জাপুর হাতেম আলী বি.এল. উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল জলিলের সাথে মোবাইল ফোনে যোগযোগ করলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমি আমার ছাত্রদের একটু শাসন করেছি মাত্র।

এ বিষয়ে গোপালপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোস্তফা কবির বলেন, বেত্রাঘাতের ঘটনায় ওই ছাত্রের সহপাঠিদের একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.